মাসুদ আলম: এই ধ্বংসস্তূপে কিছু আধপোড়া পোশাকও আছে। বিক্রয়যোগ্য কোনো কাপড় পাওয়ার সম্ভাবনাই নেই। তবুও যদি কিছু অক্ষত মেলে, এই আশায় হাতড়ে দেখছেন  ব্যবসায়ী ও কর্মচারিরা। বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, মার্কেটে কোথাও কোথাও আগুন জ্বলছে। একাধিক স্থানে উঠেছে ধোঁয়া। বঙ্গবাজারের পাশের অ্যানেক্স টাওয়ার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সেই ভবন থেকে নিজেদের মালপত্র সরিয়ে নিতে দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। কাজ করছে সিআইডি ও পুলিশ। শেষ সম্বলটুকু হারানো ব্যবসায়ী, মালিক ও শ্রমিকদের আর্তনাদ ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের এলাকা। জীবনের শেষ সম্বল হারানো ব্যবসায়ীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন আর স্মৃতিচারণ করছেন। পোড়া টিন, সাটার উল্টেপাল্টেও দেখছিলেন তারা। সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া ব্যবসায়ীদের একজন চাঁদপুরের মো. নজরুল ইসলাম। বঙ্গবাজার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ‘এক্সেসরিজ ওয়ার্ল্ড’ নামে সাতটি দোকান ছিল এই ব্যবসায়ীর। তিনি বলেন, সব দোকান মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার পণ্য ছিল। ঈদ উপলক্ষে ৮০ লাখ টাকার মতো মাল উঠিয়েছিলাম। সোমবার দিবাগত রাত ২টা পর্যন্ত দোকান করেছি।  দোকানে নগদ ১৫ লাখ লাখ টাকা ছিলো। সব পুড়ে গেছে, আমি আজ পথের ফকির।

নজরুল ইসলাম বলেন, আমার দোকানে ৪০ জন কর্মচারী কাজ করত। এখন আমি কোথায় যাব, কার কাছে যাব, ব্যাংকের লোন কীভাবে শোধ করব, এই কথা বলে বারবার মুর্ছা যান তিনি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ বলেন, আমাদের চারটা দোকান ছিল। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার আর কিছুই করার নেই। সামনে ঈদ সবাই আমার দিকে তাকিয়ে ছিল একদিনেই সব শেষ হয়ে গেলো।

দুই ভাই ইফাত হাসান ও রিফাত হাসান তাদের দুটি দোকানের কর্মীদের নিয়ে পোড়া মালামাল অপসারণের কাজ করছিলেন। রিফাত হোসেন বলেন, ২টি দোকানে প্রায় ৫০ লাখ টাকার শার্ট ছিল। আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সরকার সাহায্য না করলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার সারাদিন, সারারাত আমরা কাজ করেছি। বুধবারও প্রত্যেকটি পয়েন্টে আমাদের ফায়ার ফাইটাররা কাজ করছে। এতো বেশি পরিমাণ মালামাল গাদাগাদি করে রাখা যে সেগুলো বের করতে কষ্ট হচ্ছে। অনেক কর্মী ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। ফলে আমাদেরকে কর্মী পরিবর্তন করে দিতে হচ্ছে এবং কাজ করতে সময় লাগছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব